ঢাকা রোববার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মানিকগঞ্জে চাকরি ও ঘর বরাদ্দের প্রলোভনে আ.লীগ নেতার অর্থ আত্মসাৎ

মানিকগঞ্জে চাকরি ও ঘর বরাদ্দের প্রলোভনে আ.লীগ নেতার অর্থ আত্মসাৎ

মানিকগঞ্জে সরকারি চাকরি, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ও বিভিন্ন অনুদান পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বাচ্চু মিয়া ও তার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান মিলনের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার ও সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বাচ্চু মিয়া ও তার ছেলে সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। শিবালয় উপজেলার আলোকদিয়া চরের বাসিন্দা সকিম অভিযোগ করেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়ার কথা বলে বাচ্চু মিয়া তার কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা নেন।

একইভাবে, পারমত্ত এলাকার আনোয়ার হোসেন জানান, সরকারি অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। দুই বছর পার হলেও কেউ কোনো সুবিধা পাননি, বরং টাকা ফেরত চাইতে গেলে অভিযুক্তরা দুর্ব্যবহার করেন।

চাকরির নামে প্রতারণা অভিযোগ করে মানিকগঞ্জের রহিম বাদশা জানান, তিন বছর আগে বাচ্চু মিয়া ও তার ছেলে মিলন তাকে এবং তার ভাগ্নে দেলোয়ারকে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ১০ লাখ টাকার চুক্তি করেন। দুই মাসের মধ্যে চাকরি দেওয়ার শর্তে দুই দফায় ৬ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে চাকরি দিতে ব্যর্থ হলে টাকা ফেরত চাইতে গেলে তাকে গালিগালাজ ও মারধর করা হয়। পরে "আমার ফার্মেসি বিক্রি করে তাদের টাকা দিয়েছি। এখন মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমার বাবা এই শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।"

তদন্তে জানা গেছে, অতীতে দিনমজুরি ও রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা বাচ্চু মিয়া আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বালুমহাল, সরকারি চাকরি ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন শুরু করেন। বর্তমানে পশ্চিম দশড়া এলাকায় তার পুরোনো ভাঙা দোচালা বাড়ি পাঁচতলা ফাউন্ডেশনে পরিণত হয়েছে এবং তিনি দুইতলা পর্যন্ত নির্মাণ সম্পন্ন করেছেন।

অভিযুক্ত বাচ্চু মিয়া অর্থ নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, "রহিমের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা ও তার ভাগ্নে দেলোয়ারের কাছ থেকে ৩৩ হাজার টাকা নিয়েছিলাম। আমার ছেলে টাকাগুলো ফেরত দিয়ে দেবে।"

তার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান মিলন বলেন, "আমি বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলাম। একসময় বেউথা বালুমহাল দেখাশোনা করতাম। এখন আমাদের সময় খারাপ যাচ্ছে। আমার বাবার সঙ্গে লেনদেন হয়েছে, আমাকে এক মাস সময় দিলে টাকাগুলো ফেরত দিয়ে দেব।"

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, "অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

আত্মসাৎ,অর্থ,আ.লীগ,নেতা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত